পহেলা বৈশাখে হাজার বছরের পান্তা-ইলিশ খাওয়ার কালচার শুরু হয় মাত্র ৩২ বছর আগে !!!!

অনেকের ধারণা পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া মনে হয় ১০০০ বছর আগের কালচার, যা অবশ্য পালনীয়। আরে না ভাই, ১০০০ বছর নয়, মাত্র ৩২ বছর আগে পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ কালচার শুরু হয়েছে। এটা নিয়ে স্পষ্ট ইতিহাসও আছে।
আসুন দেখি লেখক সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে এ সম্পর্কে কি বলে-----

“৫ সেগুনবাগিচা বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ছিল দৈনিক দেশ এবং সাপ্তাহিক বিপ্লবের কার্যালয়। সে কারণেই সেখানে বসত লেখক আড্ডা। আমি ছিলাম একজন নিয়মিত আড্ডারু। ১৯৮৩ সাল। চৈত্রের শেষ। চারদিকে বৈশাখের আয়োজন চলছে। আমরা আড্ডা দিতে দিতে পান্তা-পিয়াজ-কাঁচামরিচের কথা তুলি। দৈনিক দেশের বোরহান ভাই রমনা বটমূলে পান্তা-ইলিশ চালুর প্রস্তাব দিলেন। আমি সমর্থন দিলাম। প্রথমে আমাকে দায়িত্ব নিতে বললেন। কারণ, সেই আড্ডায় আমিই একমাত্র সেই হাউসে বহিরাগত। ফলে কাজটা সম্পাদন করতে সুবিধা হবে। কিন্তু আমি একা রাজি না হওয়ায়, কবি ফারুক মাহমুদ আমাকে নিয়ে পুরো আয়োজনের ব্যবস্থা করলেন। নিজেদের মধ্যে পাঁচ টাকা করে চাঁদা তোলা হলো। বাজার করা আর রান্না-বান্নার দায়িত্ব দিলেন বিপ্লব পত্রিকার পিয়নকে। সেই হাউসে যারা তখন কাজ করতেন, তাদের মধ্যে বিপ্লবের সম্পাদক কবি সিকদার আমিনুল হক, প্রয়াত বোরহান আহমেদ, কবি ফারুক মাহমুদ, দৈনিক দেশের সাহিত্য সম্পাদক হেলাল হাফিজ, সাংবাদিক মাহবুব হাসান, শহিদুল হক খান, মুন্সী আবদুল মান্নান, রোজী ফেরদৌস প্রমুখ। প্রথমে আমরা পান্তা আর ডিম ভাজা দিতে চাইলাম। কিন্তু ডিমের স্থলে স্থান পেল জাতীয় মাছ ইলিশ। রাতে ভাত রেঁধে পান্তা তৈরি করে, কাঁচামরিচ, শুকনো মরিচ, পেঁয়াজ, ইলিশ ভাজা নিয়ে 'এসো হে বৈশাখে'র আগেই ভোরে আমরা হাজির হলাম বটমূলের রমনা রেস্টুরেন্টের সামনে। সঙ্গে মাটির সানকি। মুহূর্তের মধ্যে শেষ হলো পান্তা-ইলিশ। এভাবে যাত্রা শুরু হলো পান্তা ইলিশের।”
(সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৪ই এপ্রিল ২০১৪, লিঙ্ক: http://goo.gl/X6LKRl, আরো দেখতে পারেন- দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ এপ্রিল ২০১৪, লিঙ্ক: http://goo.gl/xnBcV8)

কি আর বলবো, বাংলাদেশীদের মত ইতিহাস জ্ঞানশূণ্য জাতি আমি আর দেখিনি। এরা মারাত্মক হুজুগে মাতাল, কেউ এক বার মাতিয়ে দিলেই হলো, না বুঝেই দোড়-ঝাপ শুরেু করে দিবে।