পহেলা বৈশাখ, ইতিহাস:
ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করতো। ----- খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করে। সে মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেয়। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবী হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন সনের নিয়ম বিনির্মাণ করে। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে নতুন সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় (৫ই নভেম্বর- ১৫৫৬) থেকে। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলী সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)
...
আকবরের শাসনামলে আকবর প্রাথমিক অবস্থায় একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ছিলো, কিন্তু কালক্রমে হারেমের অভ্যন্তরের রাজপুত এবং হিন্দু রানীদের প্ররোচনা এবং তৎকালীন হিন্দুদের আবেদনে ও সে এক বিকল্প সন খুঁজছিল। হিন্দুদের অভিযোগ ছিল, যেহেতু হিজরী সন অনুসারে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হচ্ছে, সেহেতু তাদের পূজা অর্চনায় সমস্যা হচ্ছে। আনন্দনাথ রায়ও ঠিক এমনটাই বলেছিল-
‘আকবর বাদশাহর রাজত্বকালে হিন্দু সম্প্রদায় বাদশাহের কাছে জ্ঞাপন করে, আমাদের ধর্মকর্ম সম্পর্কীয় অনুষ্ঠানে হিজরী সন ব্যবহার করতে ইচ্ছা করি না। আপনি আমাদের জন্য পৃথক সন নির্দিষ্ট করে দিন। আকবর হিন্দু প্রজার মনোরঞ্জনার্থে হিজরী সন থেকে দশ-এগার বছর কমিয়ে এলাহী সন নামে একটি সনের প্রচলন করে। যা আমাদের বঙ্গদেশের সন বলে চলে আসছে।’ (সূত্র: বারভূঁইয়া, লিখক- আনন্দরায়)
সুতরাং এখানে বোঝা যাচ্ছে হিন্দুদের পূজা এবং আকবরের আর্থিক উপকার তথা ব্যবসায়িক চিন্তা ভাবনার জন্যই এই নতুন সনের উৎপত্তি , যার পর পাঁচশ বছরও অতিবাহিত হয় নাই। সুতরাং এটা কিভাবে বাঙালির হাজার বছরের প্রাণের উৎসব হয়?