ইসলামের দৃৃষ্টিতে পহেলা বৈশাখ পালন সম্পূর্ণ হারাম


বর্তমানে বাংলা নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখ পালনের আধুনিক সংস্করণের কিছুটা নমুনা এই রকম, রবীন্দ্রসংগীতের মাধ্যমে বর্ষবরণ, বৈশাখী মেলা, রমনার বটমূলে পান্তা-ইলিশের ভোজ, জীবজন্তু ও রাক্ষস-খোক্কসের প্রতিকৃতি নিয়ে গণমিছিল, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, হাসি-ঠাট্টা ও আনন্দ উপভোগ, সাজগোজ করে নারীদের অবাধ বিচরণ ও সৌন্দর্যের প্রদর্শনী, সহপাঠী সহপাঠিনীদের একে অপরের দেহে চিত্রাংকন।
সেই সাথে মঙ্গল প্রদীপ ও আনন্দ শোভাযাত্রা মিছিল।
পহেলা বৈশাখ
উদ্দেশ্য কি,,,? এগুলো সারা মঙ্গল বয়ে আনবে। এই দিন ভালো খেলে সারা বছর ভালো খাওয়া যাবে। কেউ যদি এই ধারণা পোষণ করে, নববর্ষ পালনের সঙ্গে কল্যাণের কোনো সম্পর্ক রয়েছে, তবে সে শিরকে লিপ্ত হল, অর্থাৎ আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থির করল।
যদি সে মনে করে যে, আল্লাহ এই উপলক্ষ দ্বারা মানবজীবনে কল্যাণ বর্ষণ করেন, তবে সে ছোট শিরকে লিপ্ত হল।
আর কেউ যদি মনে করে যে নববর্ষের আগমনের এই ক্ষণটি নিজে থেকেই কোনো কল্যাণের অধিকারী, তবে সে বড় শিরকে লিপ্ত হল, যা তাকে ইসলামের সীমার বাইরে নিয়ে যাবার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।
আর এই শিরক এমন অপরাধ যে, শিরকের ওপর কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে চিরতরে হারাম করে দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন, ‘নিশ্চয়ই যে কেউই আল্লাহর অংশীদার স্থির করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন, আর তার বাসস্থান হবে অগ্নি।
ইসলামের দৃৃষ্টিতে পহেলা বৈশাখ
এবং যালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সুরা আল-মায়িদাহ, আয়াত :৭২  মনে রাখতে হবে, পহেলা বৈশাখ পালন করা মুসলমানদের জন্য হারাম! “পহেলা বৈশাখ” নামক বিধর্মীয় সংস্কৃতি জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলুন।
এটি বাঙালি সংস্কৃতিরঅবিচ্ছেদ্য অংশ নয় এটি হিন্দু সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। হিন্দু ধর্মালম্বীরা তা পালন করতে চায় করুক, সেটা করার পূর্ণ স্বাধীনতা তাদের আছে।
নাচ, গানের অনুষ্ঠান করে আর “এসো হে বৈশাখ এসো এসো” গান করে ঋতুর পুজো করা হিন্দুদের সাজে, একজন মুসলিমের না।
পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এইকথা বলে বিধর্মীদের একটি চক্র এই প্রথাটিকে এতদিন ধরে টিকিয়ে রেখেছে।
পহেলা বৈশাখে হিন্দুরা ঘটপূজা করে থাকে, শরীরে উল্কি অঙ্কন করে থাকে, নওরোজ বা নববর্ষ পালন করে থাকে এবং নওরোজ বা নববর্ষ পালন উপলক্ষে পান্তা-গান্ধা খাওয়া, গানবাজনা করা, র্যালী করা, জীব-জানোয়ারের মুখোশ পরা, নববর্ষের সম্মানার্থে মিছিল করা, কদুর খোলের তৈরি একতারা ডুগডুগি বাজিয়ে নেচে নেচে হৈহুল্লো করা, কপালে চন্দন গুঁড়ার ত্রিশালী ছাপ দেয়া, পুরুষরা ধুতি ও কোণাকাটা হিন্দুদের জাতীয় পোশাক পরা, মেয়েরা লাল পেড়ে সাদা শাড়িসহ হাতে রাখি বাঁধা, শাঁখা পরা, কপালে লাল টিপ, সিথিতে সিঁদুর দেয়া, বেপর্দা, বেহায়া হওয়াসহ হাজারো হারাম কাজে মশগুল হয়।
মূলত, উল্লিখিত আমলগুলোর কোনোটাই শরীয়তসম্মত বা দলীলভিত্তিক নয়। বরং প্রত্যেকটাই মনগড়া, বানানো, দলীলবিহীন অর্থাৎ শরীয়তবিরোধী।
বিশেষ করে ইসলামে নববর্ষ বলতে কিছু নেই।
আর নববর্ষ উপলক্ষে টাকা-পয়সা খরচ করাও ইসলামী শরীয়তে জায়িয নেই; বরং কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম আবূ হাফস কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘যারা নববর্ষ উপলক্ষে একটা ডিমও দান করবে তার জিন্দেগীর সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে।’
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ভালো খাওয়া-পরার কোনো নির্দেশনা শরীয়তে নেই।
মুসলমানদের স্মরণ রাখতে হবে, ‘পহেলা বৈশাখ ভালো খেলে সারা বছর ভালো খাওয়া যায়’- একথা সম্পূর্ণরূপেই শরীয়তের খিলাফ।
যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। মূলকথা হলো- ইসলামের দৃষ্টিতে পহেলা মুহররম হোক, পহেলা বৈশাখ হোক, পহেলা জানুয়ারি হোক তাতে ভালো বা বিশেষ খাবার গ্রহণে আলাদা কোনো ফযীলত বা বরকত-এর তো প্রশ্নই উঠে না; বরং তা বিধর্মীদের অনুসরণ ও অনুকরণ হওয়ার কারণে জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
পহেলা বৈশাখ
অতএব, প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলার জন্য পহেলা বৈশাখের কুফরী, শিরকী ও শরীয়ত বিরোধী কাজ তথা শরীরে উল্কি অঙ্কন করা, নওরোজ বা নববর্ষ পালন করা এবং নওরোজ বা নববর্ষ পালন উপলক্ষে পান্তা-গান্ধা খাওয়া, গানবাজনা করা, র্যালী করা, জীব-জানোয়ারের মুখোশ পরা, নববর্ষের সম্মানার্থে মিছিল করা, কদুর খোলের তৈরি একতারা ডুগডুগি বাজিয়ে নেচে নেচে হৈহুল্লো করা, কপালে চন্দন গুঁড়ার ত্রিশালী ছাপ দেয়া, পুরুষরা ধুতি ও কোণাকাটা হিন্দুদের জাতীয় পোশাক পরা, মেয়েরা লাল পেড়ে সাদা শাড়িসহ হাতে রাখি বাঁধা, শাঁখা পরা, কপালে লাল টিপ, সিথিতে সিঁদুর দেয়া, বেপর্দা, বেহায়া হওয়াসহ সর্বপ্রকার হারাম ও কুফরী কাজ থেকে বেঁচে থাকা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
আমাদের করণীয়:- সুতরাং ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলা নববর্ষ সংক্রান্ত যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এজন্য যে এতে নিম্নোলিখিত চারটিশ্রেণীর ইসলাম বিরোধী বিষয় রয়েছে: ১. শিরকপূর্ণ অনুষ্ঠানাদি, চিন্তাধারা ও সংগীত ২. নগ্নতা, অশ্লীলতা, ব্যভিচারপূর্ণ অনুষ্ঠান ৩. গান ও বাদ্যপূর্ণ অনুষ্ঠান ৪. সময় অপচয়কারী অনর্থক ও বাজে কথা এবং কাজ এ অবস্থায় প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব হচ্ছে নিজে এগুলো থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা এবং বাঙালি মুসলিম সমাজ থেকে এই প্রথা উচ্ছেদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো নিজ নিজ সাধ্য ও অবস্থান অনুযায়ী। ‘সূরা আলে ইমরান’-এর ৮৫ নম্বর আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক বলেন,  ﻭَﻣَﻦ ﻳَﺒْﺘَﻎِ ﻏَﻴْﺮَ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺩِﻳﻨًﺎ ﻓَﻠَﻦ ﻳُﻘْﺒَﻞَ ﻣِﻨْﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳﻦَ অর্থ: যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন নিয়ম নীতি গ্রহন করলো, তা কখনো গ্রহন যোগ্য হবে না এবং সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।
(সুরা আল ইমরান- আয়াত শরীফ নং-৮৫) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।”