পবিত্র শবে বরাত শরীফ উনার বিরোধীদের মুরুব্বী আলবানীর কিতাব থেকে পবিত্র শবে বরাত উনার পক্ষে দলীল

পৃথিবীতে একমাত্র পবিত্র শবে বরাত উনার বিরোধিতা করে থাকে ওহাবী, সালাফী, লা’মাযহাবীরা। তারা শবে বরাত শরীফ উনার কোনো অস্তিত্ব নেই বলে মিডিয়ায় অপপ্রচার চালায় এবং বলে থাকে শবে বরাত সম্পর্কে কোনো ছহীহ হাদীছ শরীফ নেই। তাদের এহেন আপত্তির প্রেক্ষিতে তাদের অন্যতম পুজনীয় নাছির উদ্দীন আলবানীর কিতাবের দলীল থেকেই জবাব দেয়াই শ্রেয় মনে করছি।

 (আলবানীর কিতাব “সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব”-এর ৩য় খন্ড ৫৩ ও ৫৪ পৃষ্ঠার স্ক্যান কপি দেয়া হলো। হাদীছ নম্বর এবং তার মন্তব্য বক্স দ্বারা চিহ্নত করা হলো)

সালাফীদের মুরুব্বী নাছিরউদ্দীন আলবানী তার একটা কিতাব “সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব” এর ৩য় খন্ড ৫৩ ও ৫৪ পৃষ্ঠায় শবে বরাত শরীফ সম্পর্কে ৫টা হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছে। উক্ত কিতাবের ২৭৬৭ নম্বর হাদীছ শরীফ হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি শা’বানের পনেরতম রাতে স্বীয় সৃষ্টির প্রতি রহমত উনার দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক, হিংসুক ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করেন। আলবানী উক্ত হাদীছ শরীফ উনাকে “হাসান সহীহ” বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।
২৭৬৮ নম্বর হাদীছ শরীফ হযরত আবু আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত এই হাদীছ শরীফ উনাকে “সহীহ লি গাইরিহী” বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। ২৭৬৯ নম্বর হাদীছ শরীফ আফদ্বালুন নাস, বাদ্বাল আম্বিয়া হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম হতে বর্ণিত হাদীছ শরীফ উনাকে “সহীহ লি গাইরিহী” বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। এবং মন্তব্য হিসাবে বলতে বাধ্য হয়েছে,  লা’বাসা বিহী বা “এই সনদে কোন সমস্য নেই। এরপর ২৭৭০ নম্বর হাদীছ শরীফে হযরত কাছীর ইবনে মুররা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফ উনাকে “সহীহ লি গাইরিহী” বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। হযরত মাকহুল রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত ২৭৭১ নম্বর হাদীছ শরীফ উাকে “সহীহ লি গাইরিহী” বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে ।

নাছির উদ্দীন আলবানীর আরো একটি কিতাবের নাম হচ্ছে “সিলসিলাতু আহাদীসি আস সহীহা”। উক্ত কিতাবেও আলবানী পবিত্র শবে বরাত উনার হাদীছ শরীফ উনাকে সহীহ বলে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে । নিম্নে উক্ত কিতাবের স্ক্যানকৃত পৃষ্ঠা দেয়া হলো-


সালাফী লা’মাযহাবীদের অন্যতম নেতা নাছির উদ্দীন আলবানী তার “সিলসিলাতু আহাদীসি আস সহীহা” কিতাবে পবিত্র শবে বরাতের হাদীছ শরীফ উনাকে সহীহ বলে উল্লেখ করে লিখতে বাধ্য হয়েছে যে,
“মহান আল্লাহ পাক শাবানের পনেরতম রাতে স্বীয় সৃষ্টির প্রতি রহমত উনার দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুশরিক, হিংসুক ব্যতীত সবাইকে ক্ষমা করেন। হাদীছ শরীফখানা সহীহ। কেননা একদল হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বিভিন্ন সূত্রে নিসফে শা’বান উনার মর্যদার একাধিক হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হওয়ার কারণে হাদীছ শরীফটি মজবুতী লাভ করেছে। যে সকল ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে উনারা হলেন, হযরত মু’আয ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু সালাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু মূসা আল আশ’আরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আফদ্বালুল নাছ বা’দ¦াল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম, হযরত আউফ বিন মালেক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, উম্মুল মু’মীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম। এছাড়াও অনেক আকাবীর ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ হাদীছ শরীফ বর্ণণা করেন।” (দলীল: সিলসিলাতু আহাদীসি আস সহীহা- আলবানী ৩য় খন্ড ১৩৫ পৃষ্ঠা: হাদীছ নম্বর ১১৪৪ , মূল কিতাবের স্ক্যন কপি দেয়া হলো)

সালাফী লা’মাযহাবীরা নাছির উদ্দীন আলবানীকে এতটাই মান্য করে যে, কোনো হাদীছ শরীফ উনার তাহক্বীক আলবানীর তাহক্বীক ছাড়া মানে না। আলবানী কোনো হাদীছ শরীফ উনার সনদকে সহীহ বললে তারা সহীহ বলে, আবার কোনটা মওজু বললে তারা সেটাই বলে। পৃথিবীর আর কে কি বলেছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপও করে না। সালাফী নেতা আলবানী যেখানে শবে বরাত শরীফ সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছ শরীফকে সহীহ হিসাবে আখ্যায়িত করতে বাধ্য হয়েছে, সেখানে তার তথাকথিত অনুসারী কুয়ার ব্যাং সালাফীরা কেন আজ শবে বরাতের বিরোধিতায় মশগুল?
সালাফী লা’মাযহাবীদের কাছে প্রশ্ন তারা তাদের নেতা নাছির উদ্দীন আলবানীর শবে বরাতের পক্ষে ফতওয়াকে মেনে নিবে কিনা? নাকি নাছির উদ্দীন আলবানীকেও মুনকার বা পরিত্যাজ্য বলে ঘোষণা দিবে?

এখন কথা হচ্ছে সালাফীরা যদি শবে বরাতের বিরোধিতা করে তবে সবার আগে আলবানীর বিরোধিতা করে, আসতে হবে .....তা কি তারা করতে পারবে ???