“পহেলা বৈশাখ” মানেই সাম্প্রদায়িকতা


উস্কানীমূলক এ বিরোধীতার মাধ্যমে কি সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়া হচ্ছে না?
আজ অনুষ্ঠিত হলো হিন্দু ও বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পহেলা বৈশাখ। হিন্দু ও বৌদ্ধরা তাদের উৎসব পালন করুক তাতে মুসলমানদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু প্রশ্ন আসে যখন মুসলমান নামধারী মুষ্টিমেয় কিছু নাস্তিক্যবাদী এই পহেলা বৈশাখের নামে মুসলমানদের প্রাণের চেয়েও প্রিয় ধর্ম সম্মানিত দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। এরা পহেলা বৈশাখের মাধ্যমে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ধর্মের বিরুধীতায় মেতে উঠে। নাউযুবিল্লাহ!
এদের কাছে দ্বীন ইসলাম বা মুসলমান কোন বিষয় নয় বরং পহেলা বৈশাখের নামে তারা এদেশে নাস্তিক্যবাদের প্রতিষ্ঠা চায়, পৃষ্ঠপোষকতা চায়। নাউযুবিল্লাহ!
এরা পহেলা বৈশাখ দ্বারা বুঝাতে চায়,
১) এদেশের মুসলমানরা ধর্মান্ধ; তাদের ধর্মান্ধতা রুখে দিতে হবে। (নাউযুবিল্লাহ)
২) এদেশের মুসলমানরা সংস্কৃতি বিরোধী। এরা আনকালচারড। সুতরাং এদেরকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতিতে আবদ্ধ করতে হবে। (নাউযুবিল্লাহ)
৩) এদেশের মুসলমানরা মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার বিরোধী। এরা নাস্তিক্যবাদের বিরোধীতা করে। এরা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে মুক্তচিন্তার লিখনীকে পছন্দ করে না। প্রতিবাদে ফুসে উঠে। সুতরাং এই পহেলা বৈশাখ দিয়ে তাদেরকে মুক্তমনা বানানোর কাজ শুরু করতে হবে।(নাউযুবিল্লাহ)
এসব দূর করতে এবার মুক্তমনা নামক নাস্তিক্যবাদীরা এবার কী আয়োজন করেছে এবং এর মাধ্যমে নাস্তিক্যবাদীরা কি পেল আর মুসলমানরা কি পেল তা দেখা যাক। http://goo.gl/iOzjQU
১) অশুভ বিতাড়নে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ করা হয়েছে।
> অথচ মুসলমানদের অশুভ কিছু নেই। তাহলে তাদের ভাষায় অশুভ কারা? যারা দ্বীন ইসলাম পালন করেন তারাই অশুভ!
> হিন্দুদের মঙ্গলযাত্রা করে মুসলমানদের হিন্দু সংস্কৃতিতে আবদ্ধ করা হচ্ছে। মুসলমানদেরকে দ্বীন ইসলাম থেকে সরিয়ে হিন্দুদের দিকে ধাবিত করা হচ্ছে। (নাউযুবিল্লাহ)
২) ‘মঙ্গল যাত্রা’য় সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী প্রধান প্রতীক ছাড়াও বড় আকারের প্রতীকের মধ্যে ছিল কাকাতুয়া, ময়ূর, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, ছাগল ও টেপা পুতুলসহ ১১টি মূর্তি ছিল। সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে ছিল ছাগল ও দুটি ছানা।
> হিন্দু ধর্ম মতে দেব-দেবীদের বিভিন্ন বাহন রয়েছে। যেমন: লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা, সরস্বতীর বাহন রাজহাঁস, গণেশের বাহন ইঁদুর, দুর্গার বাহন সিংহ, মনসার বাহন সাপ, কার্ত্তিকের বাহন ময়ূর, মহাদেবের বাহন ষাড়, যমরাজের বাহন কুকুর, ইন্দ্রের বাহন হাতি, ব্রক্ষ্মার বাহন পাতিহাঁস, বিশ্বকর্মার বাহন ঢেকি, শীতলার গাধা ইত্যাদি। আর যেহেতু যানবাহন ছাড়া দেব-দেবীদের আগমন-প্রস্থান সম্ভব নয়, অতএব, তাদের পূজাতে, তাদের শোভাযাত্রাতে দেব-দেবীদের যান-বাহনের পূজাও করতে হয়।
কিন্তু মুসলমানরা মূর্তি পূজা করেনা । পহেলা বৈশাখের দ্বারা উপরোক্ত প্রাণীগুলোর মূর্তি তৈরী করিয়ে কাধে বহন করিয়ে হিন্দুদের মতো মূর্তি পূজা করানো হলো। (নাউযুবিল্লাহ)
৩) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত এই মঙ্গলযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ ছিল ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, নেচে-গেয়ে অংশ নেয়া।
> হিন্দু-বৌদ্ধদের ধর্মীয় উৎসব হলেও একাকার করা গেল মুসলমানদের। যে মুসলমানদের জন্য ঢাক-ঢোল, নাচ-গান সম্পুর্ণ হারাম ও কুফরী। সেই মুসলমানদের পহেলা বৈশাখে মুসলমানদের হারাম ও কুফরীতে মিশিয়ে দেয়া হলো। (নাউযুবিল্লাহ)
৪) প্রায় ২০ ফুট উঁচু বিশাল এক হাতে মুক্তবুদ্ধির কণ্ঠরোধের প্রতীকী উপস্থাপনায় সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির উত্থানের চিত্র তুলে ধরে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দেয়া হয়েছে বর্ষবরণের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়’।
> সাম্প্রদায়িকতার নামে গোটা ইসলাম ধর্মকেই দেখানো হয়েছে প্রতীকী হাত রুপে। তৈরি করা হয়েছে; প্রায় ২০ ফুট লম্বা মুষ্টিবদ্ধ হাত, যার আঙুলে রয়েছে লাল রং। এই বিশাল হাত অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম বা মুসলমানরা নাস্তিক্যবাদের গলা টিপে ধরেছে। অর্থাৎ তারা পহেলা বৈশাখের নামে এদেশে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। (নাউযুবিল্লাহ)
৫) পহেলা বৈশাখের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অনেক আলো জ্বালতে হবে মনের অন্ধকারে’। অসাম্প্রদায়িক বাংলার মাটিতে উগ্রবাদী হামলায় লেখক অভিজিৎ রায় ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর রহমান খুন হওয়ার প্রেক্ষাপটে মানিক বন্দোপাধ্যায়ের কবিতা থেকে বেছে নেওয়া হয় এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য।
> কথিত মুক্তচিন্তা বিরোধী এদেশের মুসলমানদের মন অন্ধকার থাকায় নাস্তিক্যবাদী লেখকদের মেনে নেয়না। তাই এদের মন আলোকিত করতে এই প্রতিপাদ্য চয়ন করা হয়েছে। (নাউযুবিল্লাহ)
৬) পহেলা বৈশাখের বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী পৃষ্ঠপোষকরা বলেছে “কালো ছায়া দূর করে বিশ্ব মানবতার মনে আলো ছড়িয়ে দিতে এবং শান্তি-কল্যাণের হিতার্থে এই শোভাযাত্রা তথা মঙ্গল যাত্রা”।
তাছাড়া চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার বলেছে, “ধর্মান্ধতার অশুভ বিকাশের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান থেকে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার ডাক দিয়েছে তারা।”
> তাদের অবস্থান খুব পরিস্কার। তারা ৯৮ ভাগ মুসলমানদের দেশে থেকে সাম্প্রদায়িকতার নাম করে কট্টর ইসলাম বিদ্ধেষী নাস্তিকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেখানে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধীতা কেন করছে তা দেখার বিষয় নয়! (নাউযুবিল্লাহ)
সুতরাং এসবের দ্বারা বুঝা যাচ্ছে, শুধুমাত্র মুসলমানদের বিরোধীতা করা, ইসলাম ধর্মকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল্য করা, হেয় প্রতিপন্ন করা এসব উদ্দেশ্যেই তারা পহেলা বৈশাখকে বেছে নিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! তা না হলে বিধর্মীদের অনুষ্ঠানে ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ কেন?
মুসলমানদের হেয় করা কেন?
নাস্তিক্যবাদের জয়গাণ কেন?
মুসলমানদের মাঝে হিন্দু সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা কেন?
হিন্দুদের মাঝে মুসলিম সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেই কেন?
হিন্দু মৌলবাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিকী মূর্তি নেই কেন?
ভারতে মুসলিম নিরযাতন কি সাম্প্রদায়িকতা নয়?
ভারতে মুসলমানদের ‘ঘর ওয়াপসি’ নামে হিন্দুকরণ কি সাম্প্রদায়িকতা নয়?
তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ নেই কেন? কোন প্রতিকী মূর্তি নেই কেন?
যেহেতু পহেলা বৈশাখীরা এসবের বিরুদ্ধে বলে না শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধেই বলে;
তাহলে পহেলা বৈশাখীরা কী সাম্প্রদায়িক নয়?
তারা কি সাম্প্রদায়িকতা লালন করছে না?
তারা কি সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিচ্ছে না?