Loading...

বাংলা তথা ফসলী সনের সংস্কার

ইংরেজি বা গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির শুরু হয় মধ্যরাত্র থেকে, হিজরী বর্ষপঞ্জি শুরু হয় সূর্যাস্ত থেকে আর বাংলা তথা ফসলী সন শুরু হয় সূর্যোদয় থেকে।ফসলী তথা বাংলা নববর্ষেও কিন্তু লিপইয়ার বা অধিবর্ষ আছে। বাংলা সনেও ৩৬৫ দিনে বছর। কিন্তু পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরতে সময় লাগে ৩৬৫ দিনের বেশি। এই বেশি সময়টুকু যোগ করে প্রতি চার বছরে একবার অধিবর্ষ হয়। প্রথম দিকে বাংলা ক্যালেন্ডারে এমন হিসাব-নিকাশ রাখার বালাই ছিল না। কেউ রাখতও না। বাংলা একাডেমী কর্তৃক বাংলা সন সংশোধন উদ্যোগ নেয়া হয় ১৭ ফেব্রুয়ারী ১৯৬৬ সালে । ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নেতৃত্বে এ কমিটি বিভিন্ন বাংলা মাস ও ঋতুতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ সাংস্কৃতিক জীবনে কিছু সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাকে নির্ণয় করে সেগুলো হতে উত্তরণের প্রস্তাববালী প্রদান করেন। বাংলা সনের ব্যাপ্তি গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির মতোই ৩৬৫ দিনের । যদিও সেখানে পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণের পরিপূর্ণ সময়কেই যথাযথভাবে নেয়া হয়েছে । এ প্রদক্ষিণের মোট সময় ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৮ মিনিট এবং ৪৭ সেকেন্ড । এই ব্যবধান ঘোচাতে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে প্রতি চার বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয় । ব্যতিক্রম হচ্ছে সে শতাব্দীতে যে শতাব্দীকে ৪০০ দিয়ে ভাগ করা যায় না বা বিভাজ্য । জ্যোর্তিবিজ্ঞান নির্ভর হলেও বাংলা সনে এই অতিরিক্ত দিনকে আত্মীকরণ করা হয়নি । বাংলা মাস অন্যান্য সনের মাসের মতোই বিভিন্ন পরিসরের । এই সমস্যা গুলোকে দূর করবার জন্য ডঃ মুহম্মদ শহীদূল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কমিটি বাংলা একাডেমীর কাছে কতকগুলো প্রস্তাব করে ।
এগুলো হচ্ছেঃ
বছরের প্রথম পাঁচ মাস বৈশাখ হতে ভাদ্র হবে ৩১ দিনের বাকী মাসগুলো অর্থাৎ আশ্বিন হতে চৈত্র হবে প্রতিটি ৩০ দিনের মাস । প্রতি চতুর্থ বছরের ফাল্গুন মাসে একটি দিন যোগ করে তা হবে ৩১ দিনের।বাংলা একাডেমী সরকারীভাবে এই সংশোধিত বাংলা মাসের হিসাব গ্রহণ করে । যদিও ভারতের পশ্চিম বাংলায় পুরোনো বাংলা সনের প্রচলনই থেকে গেছে এর মূল কারণ এর সাথে হিন্দুদের বৈশাখী বরণ, গণেশ পূজা ও হালখাতার রেওয়াজ প্রচলিত।