Loading...

দোয়া কবুলের রাত পবিএ শবে বরাত

হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন,
অর্ধ শা’বানের রাতে তথা শবে বরাতে আমি হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখলাম তিনি উঠলেন এবং ১৪ রাকা‘আত (শবে বরাতের) নামায পড়লেন অতঃপর নামায শেষ করে বসলেন। এবং উম্মুল কুরআন তথা সূরা ফাতিহা ১৪ বার, সূরা ইখলাছ ১৪ বার, সূরা ফালাক্ব ১৪ বার, সূরা নাস ১৪ বার এবং আয়াতুল কুরসী একবার (লাক্বাদ জায়াকুম রসূলুম মিন আনফুসিকুম) আয়াত শরীফ পাঠ করলেন। অতঃপর যখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নামায শেষ করলেন তখন আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ওই শবে বরাতে যা যা করতে দেখেছি সে সব বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম।
জবাবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনি আমাকে যা করতে দেখেছেন ওইসব কাজ কোনো ব্যক্তি পালন করলে তার জন্য বিশটি মাবরুর তখা কবূল হজ্জের ছওয়াব দেয়া হবে এবং বিশ বৎসরের কবূলিয়াত রোযার ছওয়াব দেয়া হবে। এবং পরের দিন যদি সে রোযা রাখে তখন ওই শবে বরাতের রোযাদারকে সামনের তথা আগামী এক বৎসরের এবং পিছনের এক বৎসরের ছওয়াব দেয়া হবে।

( সুবহানাল্লাহ)

নিশ্চয়ই আকাশে ফেরেশ্তাদের জন্য দু’টি ঈদের রাত রয়েছে। যেমন মুসলমানদের জন্য যমীনে বাৎসরিক বিশেষ দুটি ঈদের দিন রয়েছে। অতএব ফেরেশ্তাদের ঈদের রাত হচ্ছে বরাতের রাত। আর তা হচ্ছে অর্ধ শা’বানের রাত তথা ১৫ই শা’বানের রাত। আর ফেরেশ্তাদের জন্য অপর একটি ঈদের রাত হচ্ছে শবে ক্বদর তথা ক্বদরের রাত। আর এই কারণেই অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাতকে ঈদুল মালায়িকা অর্থাৎ ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ঈদ বলা হয়।

হযরত ইমাম সুবুকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেন,
নিশ্চয়ই অর্ধ শা’বানের রাতের তথা শবে বরাতের রাতের ইবাদত এক বৎসরের পাপসমূহকে মিটিয়ে দেয়। আর জুমুয়ার রাতের ইবাদত এক সপ্তাহের পাপসমূহকে মিটিয়ে থাকে। আর ক্বদরের রাতের ইবাদত দ্বারা সমস্ত জীবনের পাপসমূহ মাফ হয়ে থাকে। এ জন্যই শবে বরাতের রাতকে গুণাহ মাফের রাতও বলা হয়। আর ঐ কারণেই শবে বরাতের রাতকে লাইলাতুল হায়াত তথা হায়াত বৃদ্ধির রাত বলা হয়।

ইমাম মুনযিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে মারফু সনদে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন যে,
যে ব্যক্তি দুই ঈদের দুই রাত্রি এবং অর্ধ শা’বান তথা শবে বরাতের রাত্রি জেগে ইবাদত বন্দেগী করবে তার অন্তর সেই কিয়ামতের দিনও মরবেনা, অথচ যেদিনটি অন্তরসমূহের মৃত্যুর দিন হবে। আর এই অর্ধ শা’বান তথা শবে বরাতের রাতকে শাফায়াতের রাত্রিও বলা হয়।

হাদীছ শরীফে আছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের জন্য শা’বান মাসের ১৩ই তারিখের রাত্রিতে মহান আল্লাহ পাক-উনার দরবারে) সুপারিশ করেছিলেন তাতে কবূল হয়েছিল এক তৃতীয়াংশ উম্মতের সুপারিশ কবুল করেন। অতঃপর ১৪ই শা’বানের রাত্রিতে পুনরায় সুপারিশ করেন, এতেও উম্মতের দুই তৃতীয়াংশকে কবুল করেন। অতঃপর ১৫ই শা’বানের রাত্রিতে তথা শবে বরাতের রাত্রিতেও উম্মতের জন্য সুপারিশ করেন এই রাত্রিতে মহান আল্লাহ পাক হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সকল উম্মতকে কবূল করেন। (সুবহানাল্লাহ)

তবে যে সকল বান্দা (আল্লাহ পাক-উনার অবাধ্য হয়েছে) অর্থাৎ উদভ্রান্ত উটের ন্যয় অবাধ্য হয়েছে, তাদের দোয়া কবুল হয় না। আর এ জন্যই এই অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাতের রাতকে মাগফিরাতের রাতও বলা হয়।
আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে আজকের রাতটিতে আল্লাহপাক ও উনার হাবীব হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক ত্বলব করার তৌফিক দিক।
(আমীন)