পবিত্র শবে বরাত উনার রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী, দোয়া-মুনাজাতকারীদের জন্য সুসংবাদ

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পবিত্র শবে বরাত উনার রাত্রিতে ইবাদত-বন্দেগী, দোয়া-মুনাজাতকারীদের জন্য সুসংবাদ

“উকনা” নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে আরজ করলেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকের এই পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে আপনার উম্মত উনাদেরকে পবিত্র ইবাদত-বন্দেগীতে নিমগ্ন থাকতে বলুন। কেননা, এই পবিত্র রাত্রিতে যাবতীয় মাক্বছুদ পুরা করা হবে। অতঃপর সে মুতাবিক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুসলমানদেরকে ওই পবিত্র বরাত উনার সারারাত্রি ইবাদত-বন্দেগীতে নিমগ্ন থাকতে বললেন এবং হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পুনরায় তথা দ্বিতীয়বার এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার উম্মত উনাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করুন যে, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করে না, এদের সকল নর-নারীকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমা করে দিবেন। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, দয়া করে আপনি আপনার মাথা মুবারক উত্তোলন করুন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মাথা মুবারক উত্তোলন করার সাথে সাথেই দেখতে পেলেন যে, পবিত্র জান্নাত উনাদের সকল দরজাগুলো অথবা আকাশের সকল দরজাগুলো উন্মুক্ত।

- প্রথম আকাশের দরজার উপরে একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি রয়েছেন। তিনি আওয়াজ দিয়ে বলছেন, ওই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যিনি এই ১৫ই শা’বান উনার রাত্রিতে তথা পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে রুকু করেছেন।

- অতঃপর দ্বিতীয় আকাশের দরজায় অপর একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি রয়েছেন। তিনিও উচ্চ আওয়াজ মুবারক-এ ঘোষণা দিয়ে বলছেন, ওই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যিনি পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে সিজদায় রত আছেন।
- এইরূপ তৃতীয় আকাশের দরজায় একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম রয়েছেন। তিনিও উচ্চ আওয়াজ মুবারক দিয়ে বলতে থাকেন, ওই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যিনি এই পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে মানুষের জন্যে দোয়া করে থাকেন।
- অনুরূপভাবে চতুর্থ আকাশের দরজায় একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি ও আওয়াজ মুবারক দিয়ে বলতে থাকেন, ওই ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ, যিনি এই পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ে কাঁদছেন।
- পঞ্চম আকাশের দরজায়ও একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি উচ্চ আওয়াজ মুবারক করে বলতে থাকেন, ওই ব্যক্তির জন্যে সুসংবাদ, যিনি এ পবিত্র বরাত উনার রাত্রিতে ভালো কাজে নিয়োজিত আছেন।
- অনুরূপভাবে ষষ্ঠ আকাশের দরজায় একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি এ মর্মে উচ্চ আওয়াজ মুবারক করে বলেন, এমন কোনো ব্যক্তি কি আছেন, যিনি সত্যিকার প্রার্থী? তিনি যা কিছু কামনা করবেন এ পবিত্রতম রাতে তাই পাবেন। সুবহানাল্লাহ!

- তদ্রুপ সপ্তম আকাশের দরজায় একজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি এ বলে উচ্চ আওয়াজ মুবারক দিয়ে বলতে থাকেন যে, এমন কোনো পাপী আছে কী? আজকে এই পবিত্রতম রাত্রে ক্ষমা প্রার্থনা করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

আমি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এ সমস্ত দরজাগুলো কতক্ষণ পর্যন্ত খোলা থাকবে? তিনি উত্তরে বললেন, ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত খোলা থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই পবিত্র বরাত উনার পবিত্রতম রাত্রিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি বনী কালব গোত্রের বকরীর পশমের চেয়েও অধিক সংখ্যক লোককে ক্ষমা করে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ!


কাজেই এই পবিত্রতম শবে বরাত উনাকে অস্বীকার করার অর্থই হচ্ছে- পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে অস্বীকার করা। যা মূলত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই অস্বীকার করার শামিল, আর এটা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।