নানা - নাতি ও পহেলা বইশাখ


নাতি- আসসালামু আলাইকুম নানা 
নানা- ওয়ালাইকুমুসসালাম নাতি 
নাতি- কেমন আছেন নানা ?
নানা- আলহামদুলিল্লাহ্‌
নাতি- নানা, সামনে তো পহেলা বৈশাখ । 
নানা- তো কি হইসে ?
নাতি- আপনি কি পালন করবেননা ?
নানা- কেন করব ?
নাতি- কি বলেন নানা ? ইহা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য !
নানা- কে কইসে হাজার বছরের ?
নাতি- কেন সবাই তো তাই বলে ?
নানা- মুর্খরা বলে যারা ইতিহাস জানেনা । আরে ফসলি সন যাকে আমরা বাংলা সন বলি তা ৯৬৩ হিজরি হতে শুরু । এখন ১৪৩৬ হিজরি । ৫০০ বছর তো পার হয় নাই,হাজার বছরের ঐতিহ্য হল কি করে ?
নাতি- তাইলে কি আমরা ভুল জানি ?
নানা- হ, ভুলই তো । 
নাতি- কিন্তু নানা কেউ কেউ বলে যে ইহা বাংগালী সংস্কৃতি ?
নানা- এখানেও অজ্ঞতার কারণে মানুষ ভুল বলে। বাংলা সন চালু করে বাদশাহ আকবর যে ছিল মঙ্গোলীয় , মোঘল সম্রাট ,শাসন করেছে দিল্লিতে বসে।আকবর কি বাংগালী ছিল ?  তাহলে কি করে ইহা বাংলা সংস্কৃতি ? 
নাতি-তাইলে আমাদের দেশে এল কি করে ? 
নানা- আরে নাতি , সে তো আমিও ভাবি। আমরা তো এই দিবস পালন করি নাই ! পরে শুনলাম এক নাস্তিক ওয়াহিদুল হক ও তার বউ ,ওই যে ছায়ানটি নাকি কি তারা রমনায় অশ্বথ গাছের নিছে রবি ঠগের লিখা দিয়ে শুরু করে । এরপর যে কি হল মানুষের ,এই দিন আসলেই পাগল হয়ে যায় । 
নাতি - কিন্তু নানা এতে কি সমস্যা ?
নানা-কি বলিস নাতি ? তুই কি দেখস না এদিন মানুষ কি করে ? পোলারা ধুতি পরে , মেয়েরা কপালে টিপ, হাতে বালা, সিদুর পরে,উল্কি আকে ! এগুলা কি মুসলমানের নাকি বাংগালীর সংস্কৃতি ? এগুলা কি আমাদের পোষাক ?এই যে চারুকলা বিভিন্ন মুখোশ বানিয়ে রথযাত্রা করে হিন্দুদের মত তা কি আমাদের সংস্কৃতির কোথাও আছে ? 
নাতি- নানা এদিন তো  বাংগালীরা একত্রিত হয়ে দেশের প্রতি তাদের প্রেম প্রকাশ করে !! 
নানা- কিসের দেশপ্রেমরে নাতি ? সারাদিন খায় পশ্চিমা খাবার , পোষাক পরে পশ্চিমা,চালচলন পশ্চিমা, কথাবাররাত্য পশ্চিমা তারা এদিন পান্তা গান্ধা খেয়ে কিসের বাঙ্গালিয়ত্ব প্রকাশ করে ? ইহা নিছক ভন্ডামী,আর গরিবের প্রতি উপহাস । 
নাতি- শুনলাম ইসলামে নাকি কঠোর নিষেধ ?
নানা- নিষেধ ই তো । নববর্ষ পালন কি কোথাও লিখা আছে ? উদাহরন দেখাতে পারবে পুর্বের মুসলমান ইহা পালন করেছে ? এদিন তো হিন্দু , মজুসীদের পুজা ।মুসলমান কি পুজা করে নাকি ?মহান আল্লাহ পাক তো পবিত্র কুরআন পাকে বলেই দিয়েছেন:“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন (নিয়মনীতি, অন্য ধর্ম) তালাশ করে, তা কখনোই তার থেকে গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হবে।” (সূরা আলে ইমরান-৮৫)
রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তি আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে বিজাতীয়দের সাথে সাদৃশ্য রাখে।” (মিশকাত) “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (আবু দাউদ, মিশকাত শরীফ)
তো এই দিন সব হল কাফিরদের দিবস । এখন চিন্তা কর কোন মুসলমান যদি পালন করে তাহলে সে কাদের অন্তর্ভুক্ত হল? আর মরার পর তাদের কি অবস্থা হবে ? 
নাতি- তাইলে কি নানা ইহা পালন করবনা ? 
নানা- না করা যাইবোনা । মুসলমান হয়ে কাফিরদের অনুষ্ঠান পালন করবি কেন ? তারা কি ঈদ গাহে এসে নামাজ পড়ে ? মুখে হিন্দুদের ঘৃনা করবি আর কাজের বেলায় তাদের পুজা পালন করবি ? 
নাতি- বুঝলাম নানা,ইহা পালন করা যাবেনা। কিন্তু নানা যারা করে তাদের কি হবে ? 
নানা- ইসলামী শরীয়ত অনুসারে পহেলা বৈশাখ পালনকারী মুরতাদ বা ইসলামচ্যূত হয়ে যাবে ।আর মুরতাদের শাস্তি হচ্ছে:
১) তার জীবনের সমস্ত নেক আমল বাতিল হয়ে যাবে
২) হজ্জ করলে তা বাতিল হয়ে যাবে
৩) স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে, এরপর সন্তান হলে অবৈধ সন্তান হবে।
৩) ওয়ারিস সত্ত্ব বাতিল হয়ে যাবে
৪) মারা গেলে জানাজা পড়া যাবে না, কেউ ঐ ব্যক্তির জানাজা পড়লে সেও মুরতাদ হয়ে যাবে।
৫) তাকে মুসলিম উপায়ে কবর দেয়া যাবে না, কুকুর বিড়ালের মত মাটির নিচে পুতে রাখতে হবে।
নাতি- কও কি নানা ? তাইলে তো পালন করা তো দূর এই দিবসে লক্ষ্য করে কোন আয়োজন ও করা যাবেনা । 
নানা- ঠিক তাই । 
নাতি- নানা , তাইলে তো সকলরে জানায়ে দিতে হবে । আমার পরিচিত সকলকে এই দিবস পালন না করার জন্য বলি । 
নানা- জলদি যা নাতি । তোর উছিলায় যদি একজন লোক ও এই হারাম দিবস থেকে বিরত থাকে তাহলে আল্লাহ পাক আসমান-জমীন সমান নেকি তোর আমলনামায় লিখা থাকবে। সুবহানাল্লাহ । 
নাতি - আমি যাই নানা, আসসালামু আলাইকুম ।
নানা- ওয়ালাইকুমুসসালাম