বৈশাখে টিএসসিতে নারীর শ্লীলতাহানী নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা কথা চলছে । নাস্তিক ও ইসলামবিদ্বেষিরা সেজন্য মুসলমান ,পর্দা ও হিজাবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি । পর্দা শরীয়তের একটি ফরয বিধান। এ বিধানের প্রতি সমর্পিত থাকা ঈমানের দাবি। কিন্তু বেদনার বিষয় এই যে, পশ্চিমা সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের ‘মুসলিম-সমাজ’ এতটাই প্রভাবিত হয়ে পড়েছে যে,পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর বিধানও তাদের কাছে অপরিচিত ও অপ্রয়োজনীয়! (নাউযুবিল্লাহ)
কাফির-নাস্তিকদের কথা বাদ দিলাম। কিন্তু একজন মুসলমান কতটুকু পর্দা পালন করেন ? নারী পুরুষ উভয়ের জন্য পর্দা কতটুকু পালনীয় ?
১. পুরুষের পর্দা- সুরা নূরের ৩০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ্ পাক বলেছেন-"মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য পবিত্রতা আছে।"
এ সম্পর্কে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেছেন , যদি কোন মহিলার দিকে হঠাৎ নজর পড়ে যায় , তাৎক্ষণিক দৃষ্টি সরিয়ে নেবে এবং তার দিকে আর দ্বিতীয়বার তাকাবে না।"
২. নারী - সুরা নূরের ৩১ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ্ পাক বলেছেন-"ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে ও নিজেদের দেহ-সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। "তোমরা (নারীরা) নিজ গৃহে অবস্থান কর, আইয়ামে জাহেলিয়াতের ন্যায় সোন্দর্য্য প্রদর্শন করে বেড়িয়োনা। (সূরা আহযাব : ৩৩)
হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন , ‘মেয়ে মানুষের সবটাই লজ্জাস্থান (গোপনীয়)। আর সে যখন বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে সুশোভন করে তোলে।’ (তিরমিযী, মিশকাত ৩১০৯ নং)
পশ্চিমা বিশ্বে নারীরা নাকি যা খুশি তা করতে পারছে ,ইচ্ছেমত চলতে পারছে , নিজেদের অধিকার আদায় করতে পারছে ,হয়রানী হচ্ছেনা !! মিডিয়া ফুলিয়ে ফাপিয়ে মুসলিম দেশে এসব প্রচার ও করে !যাতে মুসলিম নারীরাও তাদের মত অধিকার আদায়ের জন্য সচেতন হয় !!! কিন্তু বাস্তবতা কি ? পশ্চিমা বিশ্বে নারীরা আসলে কতটুকু স্বাধীন ? তারা কি শান্তিতে আছে ? তারা কি নিজেদের ইজ্জত রক্ষা করতে পারছে নাকি প্রতিনিয়ত পুরুষ কতৃক লাঞ্চিত হচ্ছে ?আমরা যদি সর্বাধিক ধর্ষণ অপরাধের সঙ্গে শীর্ষ ১০ দেশ এর নাম দেখি তাহলে অবাকই হতে হয় ! –
কারা সেরা ১০ এ অবস্থান করছে ?
১০. ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড- ৯. জিম্বাবুয়ে-
৮. অষ্ট্রেলিয়া- প্রতি ৬ জনে ১ জ নারী ধর্ষনের শিকার ।
৭. কানাডা- প্রতি বছর ৪লক্ষ ৬০ হাজার কেস আসে ।এর বাইরে আরো রয়েছে অনেক ধর্ষন । ১৬ বছরের নীচে ধর্ষনের হার ১৭ %
৬. নিউজিল্যান্ড ৫. ইন্ডিয়া-
৪.ইংল্যান্ড এন্ড ওয়ালস - প্রতিদিন ২৩০ জন ধর্ষিত হয় ।প্রতি ৫ জনে একজন ১৬ বছরের পুর্বেই ধর্ষিত হয়।
৩. আমেরিকা- প্রতি ৩ জনে একজন নারী ধর্ষিত হয়। ১৮ বছরের পুর্বে ৪০ % ধর্ষনের শিকার ।১০৭ সেকেন্ডে একজন । ১২-১৮ বছরের মেয়েরা বছরে ২ লক্ষ ৯৩ হাজার জন ধর্ষিত হয় । ৬৮ % ধর্ষনের রিপোর্ট হয়না। ৯৮ ভাগ ধর্ষকের শাস্তি হয়না। এমনকি জেলেও নারীদের শান্তি নাই , ২ লক্ষ ১৬ হাজার নারী প্রতিবছর জেলে ধর্ষিত হয়
২. সুইডেন ১. দক্ষিন আফ্রিকা ।
এ তথ্য থেকে কিছু প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক -
১. পাশ্চাত্যে নারী স্বাধীনতার নামে চলছে গনহারে সম্ভ্রম লুন্ঠন । পাশ্চ্যাত্যের একজন পুরুষ যতি নারীদের অধিকার দেওয়ার কথা বলুকনা কেন ,আসলে সে নারির প্রতি বর্বর ,হিংস্র ,হায়েনার আচরন করতে দ্বিধা করেনা। তারা নিজেদের সভ্য ,উন্নত ,আধুনিক,শিক্ষিত বলে প্রচার করলেও মুলত এরাই অসভ্য ,বর্বর ,হিংস্র , নিরক্ষর প্রজাতির নিকৃষ্ট পশু।
২. একজন নারী স্বাধীনতা চায় কার কাছ থেকে ? পুরুষতান্ত্রিক সমাজে চাইলেই কি সে স্বাধীনতা পেয়ে যাবে ? যদি পেতই তাহলে পশ্চিমা বিশ্বে আজ নারীদের এ দুরাবস্থা কেন ?
৩.এখন প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক তারা কেন নারীদের স্বাধীনতা দিচ্ছে ? পশ্চিমা বিশ্ব নারীদের স্বাধীনতা দিচ্ছে নিজেদের স্বার্থের জন্য । নারী যদি ঘরে আবদ্ধ থাকে তাহলে তারা তো তাদের অবৈধ বাসনা পুরন করা, নারিদের বঞ্চিত করা,নারীদের অবাধে সম্ভ্রমহানী করা,নারীদের নিয়ে যা খুশি তা করতে পারবেনা ।
৪.পশুদের কোন জীবন ব্যবস্থ্যা নাই। নারী স্বাধীনতার আড়ালে আজ তারা পশুত্বের জীবনযাপন করছে। পশ্চিমাসহ কাফিরদের জীবন প্রনালী ও তাই। যার কারনে আজ পশ্চিমা বিশ্বে নারী স্বাধীনতার আড়ালে চলছে নারীত্বের চরম অবমাননা ।তাহলে নারী স্বাধীনতা চেয়ে তারা কি পেল ? লাঞ্চনা ,গঞ্চনা ,অবমাননা,ইজ্জতহানী ছাড়া আর কিছু পেয়েছে কি ?
৫.বাংলাদেশে কথিত চুশীল সমাজ , নারিবাদি, হলুদ মিডিয়া ,নাস্তিকেরা কেন নারী স্বাধীনতার ধোয়া তুলতেছে ? কারন একই । এরাও চায় নারী রাস্তায় নেমে আসুক , আটসাটো পোষাক পরুক,উলংগ হয়ে চলুক । তাহলে যখন খুশি,যত খুশি মেয়েদের সম্ভ্রমহানী করতে সুবিধা হবে । পাশ্চাত্যে নারিদের উপর পুরুষদের নির্যাতন যার প্রমান । পাশ্চাত্যের দেশ সমুহ চাচ্ছেও তা । কাফিরদের দেশে নারিরা যেমন লাঞ্চিত হচ্ছে ,তারা চায় মুসলিম দেশেও তাই হোক । আর সেজন্য তারা এসকল দালালদের মাধ্যমে আজ নানাভাবে মেয়েদের প্ররোচিত করছে খেয়াল খুশিমত চলতে।
৬. মুখে চুশিলেরা নারিদের জন্য উদার সাজলেও সুযোগ পেলেই ওই নারীর উপর থাবা দিতে সে দ্বিধা করবেনা ।যেসকল পুরুষ নারিদের অবাধ স্বাধীনতার কথা বলে তারাই মেয়েদের সম্ভ্রমহানী করে বেশি। চুশীল সমাজ, মিডিয়া যার নিকৃষ্ট প্রমান।
৭.অপরদিকে সেরা ১০ ধর্ষনের দেশে নামের তালিকায় কোন মুসলিম দেশের নাম রয়েছে কি ? নাই । কারন মুসলমান তাঁর ধর্মীয় আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে পবিত্র জীবন যাপন করে । একজন মুসলমান ধর্মের আদেশে নিষেধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। ইসলাম দিয়েছে নারীদের সম্মানের জীবন । তাহলে নারীর কেন ইজ্জতহানী ? কারন নারীরা আজ ইসলামের আদর্শ থেকে দুরে সরে গিয়ে কাফিরদের অনুসরন করে তাদের নারিদের মত স্বাধিনতা চাচ্ছে ।তাই আজ যেসকল নারী এদের ফাদে পা দিয়ে তাদের কন্ঠে কন্ঠে মিলিয়ে নিজেদের অবাধ অধিকার আদায়ের ধোয়া তুলছে, তাদের নিজেদের সিধ্বান্ত নিতে হবে তারা কি পশুর জীবন চায় নাকি সম্মানের জীবন ?
কে কি লিখেছে -
১. নারীদের মার্শাল আর্ট শেখার পরামর্শ দিয়েছে জাফর ষাড়।
২. চুশীল আনিসল বক গং নারী অধিকার ,নারী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ক্লান্ত -শ্রান্ত পরিশ্রম করছে ।
তাই আনিসুল বক গংদের প্রতি প্রশ্ন জাগে " বন্য পশু নাস্তিকেরা , কবে তোরা মানুষ হবি, কবে হবি সভ্য ?
৩. একজন বলেছে কেচি ,চুরি , স্ক্রু ড্রাইভার হাতে রাখতে
৪. একজ বলেছে মেয়েরা বিবস্ত্র হয়ে চললেও পুরুষেরা তাকাবে কেন ?
৫. একজন আরো বিশ্রি ,নোংরা ভাষায় বলেছে
৬. এক পেজে বলেছে –
বৈশাখী বোরখা
নারী কোন ছেলে সন্তান জন্ম দিবেনা
My biological structure is not my sin , allah made it curvy
সমস্যা আমার পর্দা পোষাকে না ,সমস্যা পুরুষের নোংরা চোখ আর মনে
আমার পর্দা ঠিক করার আগে নিজের চরিত্র ঠিক কর
অস্ত্রের আশ্রয় নাও ,যদি আইনের আশ্রয় না পাও
কিন্তু এরা -
১. বিলবোর্ডে নারীর শ্লীলতাহানী হচ্ছে তার বিপক্ষে বলেনা
২ . যখন খৃষ্টান নানেরা শরীর ঢেকে বের হয় তার খিলাপ তারা কথা বলেনা ।
৩. মিডিয়ায় মেয়েরা যে নির্যাতিত হচ্ছে তার বিরুদ্ধে বলেনা
৪. ধর্ষনের দেশ রেন্ডিয়ায় বাংলাদশি নারীকে ধর্ষন করে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু তারা এর বিরুদ্ধে বলেনা
৫. হিন্দু শিক্ষক কতৃক নারিদের সম্ভ্রমহানী হয়েছে তার বিরুদ্ধে বলেনা
আজ নারীদের যে অবমাননা হচ্ছে তাতে সবাই নানাবিধ প্রতিকারমুলক কথা বলে কিন্তু ইসলাম উনার বিধানের কথা বলেনা। যে যত কারনই দেখাক আর যত যুক্তি-ই দেখাক যদি নারী পুরুষ উভয়েই পর্দা অনুসরন না করেন তাহলে এ সংকট উত্তরনের ২য় কোন পথ নেই।একজন মুসলমান হিসেবে আপনি ইসলাম উনার আদেশ মানবেন নাকি প্রগতিশীলতার দোহাই দিয়ে ইসলাম উনার আদেশ খিলাপ চলবেন ?