আমাদের কেন কথিত ‘বাঙালি সংস্কৃতি’ পহেলা বৈশাখ পালন থেকে বিরত থাকা উচিত?

আমরা কেন পহেলা বৈশাখ পালন করবো না -এ বিষয়টি বুঝতে হলে আগে বুঝতে হবে আমরা (বাঙালিরা) কেন পহেলা বৈশাখ পালন করি? এ প্রশ্নটি পহেলা বৈশাখ পালনকারীদের মধ্যে ছুড়ে দিলে অধিকাংশ লোকই জবাবে যে কথাগুলো বলবে তা হচ্ছে এমন- ‘এটা বাঙালির ঐতিহ্য’, ‘পহেলা বৈশাখ বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য’, ‘বাঙালি সংস্কৃতি’, ‘আমরা নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পহেলা বৈশাখ পালন করি’, ‘বাঙালি হিসেবে নিজেদের সংস্কৃতি পালন করছি’ ইত্যাদি। একথাগুলো হচ্ছে ভারত নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের  বহুল প্রচারিত শব্দমালা, যার সাথে বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যগত কোনো সঙ্গতি নেই। পহেলা বৈশাখকে মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দিতে এসব শব্দ এতোবার, এতো জায়গায় প্রচারিত হয়েছে যে, মানুষ বিনা দলিলে মুখস্ত করে ফেলেছে যে, পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতি। এখন মিডিয়ার প্রচারিত ‘হাজার বছরের ঐতিহ্য’, ‘বাঙালি সংস্কৃতি’ -এসবই যদি পহেলা বৈশাখ পালনের মূল কারণ হয়, তাহলে এসব যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয়, তবে কি আমরা এই মিথ্যা উৎসবটি পালন করতে থাকবো?
পহেলা বৈশাখ নিয়ে প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বাংলা ও বাঙালির সাথে ১লা বৈশাখের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে এটি কোত্থেকে আসলো?

ঐতিহাসিকভাবে একথা প্রসিদ্ধ যে, কথিত বাংলা সন অর্থাৎ ফসলী সন প্রণয়ন করে মোঙ্গলীয় শাসক সম্রাট আকবর। যেহেতু সে বাঙালি ছিল না, তার ভাষাও বাংলা ছিল না, তাহলে তার প্রণিত ফসলী সন বাংলা সন হয় কি করে?
সুতরাং এটা প্রমাণিত হলো যে, পহেলা বৈশাখের সাথে সাথে বাঙালির কোনো সম্পর্ক নেই, সম্পর্ক মোঙ্গলীয়দের সঙ্গে। আরো একটি সম্পর্ক আছে হিন্দুদের সাথে। কারণ বাদশাহ আকবর এই দিনগণনা ব্যবস্থা প্রণয়ন করে হিন্দুদের পূজার সুবিধার্থে। যেহেতু হিজরী সন মোতাবেক তাদের পূজার দিন গননা করতে সমস্যা হতো। সুতরাং তাদের আবেদন মঞ্জুর করে হিন্দুদের জন্য ফসলী সন নামে এই কথিত বাংলা সন প্রণয়ন করে। সুতরাং এর সাথে বাংলা, বাঙালি ও মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং এদিনে হিন্দু-বৌদ্ধ-মজুসীদের বহু পূজার দিন থাকায় এটি তাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আর হিন্দু মাত্রই হিন্দুস্তান তথা ভারতের সাথে সম্পর্কযুক্ত, বাংলাদেশের সাথে নয়। সুতরাং বাংলাদেশের মানুষের সাথে পহেলা বৈশাখের কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই। এরপরেও কি আমরা পহেলা বৈশাখ পালন করবো?
উল্লেখ্য, নাপাক হিন্দু, বৌদ্ধ, মজুসীরা বৈশাখের প্রথম তারিখে বিভিন্ন ধরনের পূজা-অর্চনা তথা শিরকী কর্মকা- করে থাকে। এই দিনে তারা বিভিন্ন ধরনের হারাম অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে থাকে। রাস্তাঘাটে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে হিন্দুয়ানী রথযাত্রা, মূর্তি-মুখোশ নিয়ে হৈ-হুল্লোড়, অশ্লীলতা-বেহায়াপনায় মেতে উঠে। পহেলা বৈশাখে এই হিন্দুয়ানী অপকর্মগুলোই সংঘটিত হয়, যা অন্তত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গর্হিত কাজ। সুতরাং আমরা মুসলমানরা কখনোই এই দিনটি পালন করতে পারি না।