পহেলা বৈশাখ মানেই বাঙালীর বজ্জাতি, হুজ্জাতি আর লুইচ্চামির দিন

১) ‘বজ্জাাতি’ শব্দটা প্রথমেই আনলাম, কারণ আমার মনে হয়েছে, যারা এ দিবসের ইনজেকশন হুজুগে বাঙালীর মধ্যে পুশ করেছে, তাদেরউদ্দেশ্যটা ভালো ছিলো না। যে থিউরিগুলো তারা ব্যবহার করেছে, সেগুলোর গোড়ায় গলদ ছিলো। মানে ভুল থিওরি দিয়ে পাবলিক মাথাওয়াশ করা হয়েছে। যেমন: ‘এটা হাজার বছরের বাঙালী সংস্কৃতি’, ‘এটা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অনুষ্ঠান’, ‘বটমূল-পান্তা-ইলিশ এগুলো আদিকালচার’ ইত্যাদি টার্মগুলো পুশ হয়েছে প্রকৃত ইতিহাস আড়াল ও বিকৃত করেই।
২) আজ থেকে ২৫ বছর আগে (১৯৯০ সালে) মাকসুদ গান গেয়েছে, “মেলায় যায়রে, মেলায় যায়রে, বাসন্তী রং শাড়ি পড়ে ললনারা হেটে যায়,ঐ বখাটে ছেলের ভীড়ে ললনাদের রেহায় নাই”। তারমানে পহেলা বৈশাখের মেলায় ললনারা বখাটের হাত দিয়ে দলিত-মলিত হয় এটাঅনেকটা ইউনিভার্সাল ট্রুুথ, যা ললনারাও খুশি মনে মেনে নিয়েছে। এটা হচ্ছে বাঙালী’র লুইচ্চামি।
৩) এরপর হলো ডেক সেটের কানফাটা আওয়াজ, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা। রোগি, বয়স্ক, শিশু কোন রেহাই নাই । মনে হচ্ছে যুদ্ধ দামামা বাজছে,ছেলেপেলেরা সব মৃগি রোগীর মত হাত-পা ছুড়ছে। এটাই হচ্ছে বাঙালীর হুজ্জাতি (দাঙ্গা-হাঙ্গামা)।
৪) ৫০০ টাকার শাড়ি ১০০০০ টাকায়, ৫০০ টাকার পাঞ্জাবি ৫০০০ হাজার টাকায়, ৫০০ টাকার ইলিশ ৫০,০০০ টাকায়, ১০০ টাকার ইলিশ-পান্তা ১০০০ টাকায়---এটাও হলো পহেলা বৈশাখের বজ্জাতি।
৫) ‘বজ্জাতি’ শব্দখানা বার বার আনছি, কারণ এক বজ্জাত মানুষের দ্বারা সব অপকর্ম করা সম্ভব। বজ্জাত মানুষগুলো দেশপ্রেমের সিকিও বুঝেনা, সারা দিন ডিশে বিদেশী সংস্কৃতি দেখে, ছেলেমেয়েকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করিয়ে গর্ববোধ করে, ভিসা নিয়ে পশ্চিমে যেতে পারলেচৌদ্দ পুরুষের ভাগ্য বলে বর্ণনা কলে। অথচ এরাই কিন্তু ঐ একটা মাত্র দিন পান্তা-গান্ধা খেয়ে, আর হাতে একতারা নিয়ে বাঙালী সাজার ঠংকরতে উদ্দত হয়। বলাবাহুল্য স্ব-জাতির মূল্যবোধ তথা জাতীয়তাবোধ না থাকা বজ্জাতের একটি বিশেষ লক্ষণ। পহেলা বৈশাখে বাঙালীদেরবিশেষ করে বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে সেই লক্ষণ সুস্পষ্ট হয়।
৬) পহেলা বৈশাখ লুইচ্চামিটা প্রায় পারিবারিকভাবে সিদ্ধ। বাবা তার মেয়েকে এমনভাবে শাড়ি পরিয়ে নিয়ে যায়, যেন কোমরের ভাঁজ সহজেচোখে পরে। মা মেয়েকে ব্লাউজের পিঠ এত বড় করে বানিয়ে দেয়, যেন ভীড়ের মধ্যে পুরুষদের হাত বিচরণ করার অধিক এরিয়া লাভ করতেপারে। আমি ১০০ ভাগ শিওর, এখানে বাঙালীর সংস্কৃতি পালনের আগ্রহ শূণ্য দশমিক ১ ভাগও নেই, অধিকাংশই মনে মনে লুইচ্চামির বাধভেঙ্গে দৌড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
৭) আমি মনে করি ‘বাঙালীর পহেলা বৈশাখ পালন’ জাতিগত ভাবে চিন্তার কারণ। এ কারণেই যে, কালচারের নামে অপকালচার করাসাধারণত সমাজের নির্দি্দষ্ট একটি গোষ্ঠীকেই করতে দেখা যায়। কিন্তু সমাজের টপ-টু-বটম যখন যাচাই-বাছাইহীনভাবে সেই অপকর্মে গাভাষায়, তখন ঐ জাতির জন্য মায়া হওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না।

সর্বশেষ, কিছুই বলার নাই, শুধু এতটুকু বলবো-- কোন জাতির মধ্যে যখন হুজ্জাতি, লুচ্চামি আর বজ্জাতি’র প্রবল জোয়ার দেখা যায়, তখনএকই সাথে তার পতনের ধোঁয়াও দৃশ্যমান হতে থাকে। বলাবাহুল্য ঐ ধোঁয়া আগমন ঐ জাতির মনুষ্যত্ব দহনের মাধ্যমেই উদগিরিত হচ্ছে, যারখবর সে নিজেই জানে না।