ধর্মীয় ক্ষেত্রে বাংলায় (বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গ) পূজা এখনো বাংলা বর্ষপঞ্জি নির্ভর।বাংলায় গণেশ হিন্দু র্ধমালম্বীদের এক দেবতা। এই অঞ্চলে গণেশের সবচেয়ে বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ তারিখে বাংলা নববর্ষের দিন পালিত হয়। প্রত্যেক প্রত্যেক হিন্দু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এইদিন গণেশ পুজা হয়। কলকাতার কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে গণেশ ও লক্ষ্মীর প্রতিমা এবং হালখাতা নিয়ে অনেকে এই দিন সকালে পূজা প্রদান করতে যায়। পূজা হয় গঙ্গাতীরে ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য মন্দিরেও। দুর্গামূর্তির ডানদিকে অথবা কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাঁদীকে গণেশের মূর্তি নির্মান করে পূজা করা হয়। সকালের সূর্য্যকে স্বগত জানানো তথা সূর্য্য পূঁজা করা হয় যা সম্রাট আকবর করত। বাংলা নববর্ষ হিন্দুদের খাছ ধর্মীয় উৎসবের দিন। এর আগের দিন তাদের চৈত্র সংক্রান্তি। আর পহেলা বৈশাখ হলো ঘট পূজার দিন।
প্রভাতে উদীয়মান সূর্যকে স্বাগত জানায় যা সূর্য পুজার শামিল। সম্রাট আকবর সে আমলের।সম্রাট আকবর সে আমলের উলামায়ে ছু দের কবলে পরে শেষের দিকে সূর্য্যের পূজা করা শুকরে। আর সেই রসশ তথা প্রথা আমাদের মধ্যে সুকৌশলে প্রবেশ কারিয়ে দেয়া হচ্ছে। কালামুল্লাহ্ শরীফ এর সুরা নমলে আল্লাহ্ পাক বলেন “আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সেজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলী সুশোভিত করে দিয়েছে। অতঃপর তাদেরকে সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না।“
ধর্মীয়, সামাজিক, প্রশাসনিক, দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদি কারণে পঞ্জিকা প্রণীত হয়। আধুনিককালে আন্তর্জাতিক প্রয়োজনও তৈরি হয়েছে। বাংলা সন বলতে আমরা যে পঞ্জিকা পাই, তার কোনো প্রয়োগ শিক্ষিত বাঙ্গালী মুসলমানের জীবনে আছে? নেই। আইন করা সত্ত্বেও তা কি আমাদের প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে? না।
পহেলা বৈশাখ পালনের নামে বেপর্দা, বেহায়াপনা, বেলেল্লাপনা, মাতলামি করা সম্পূর্ণরূপে হারাম। ইসলামের দৃষ্টিতে নওরোজ বা যে কোন ধরনের নববর্ষ পালন করা হারাম ও বিদ্য়াত। হজরত ইমাম আবু হাফস কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, নওরোজ বা নববর্ষ উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে তার ৫০ বৎসরের আমল থাকলে তা বরবাদ হয়ে যাবে। অর্থাৎ নওরোজ বা নববর্ষ পালনের কারণে তার জিন্দেগীর সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে।
কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই সমস্ত প্রাণীর মাঝে আল্লাহ পাক, উনার নিকট কাফিরেরাই নিকৃষ্ট, যারা ঈমান আনেনি (সূরা আনফাল-৫৫)। আর নববর্ষ পালনের দ্বারা ওই কাফিরদেরই অনুসরণ-অনুকরণ করা হয়। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তাদের হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (সুনানে আহমদ, সুনানে আবূ দাউদ) বর্তমান যামানার উলামায়ে ‘ছূ’রা এবং ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবসাকারী রাজাকারদের মুখপত্র দৈনিকগুলো বাংলা নববর্ষকে আল্লাহ পাক, উনার নিয়ামত বলে তা পালন করার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে; অথচ এটা সম্পূর্ণ কুফরী কাজ। উলামায়ে ‘ছূ’ তথা ধর্মব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তারাই বেশরা-বিদয়াতের দিকে আহ্বান করছে। বর্তমানে আমাদের দেশসহ অন্যান্য দেশে নববর্ষ উপলক্ষে বছরের পহেলা দিন যেমন- পহেলা মুহররম, পহেলা বৈশাখ, পহেলা জানুয়ারীতে ভাল বা বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। অথচ এর মধ্যে আলাদা কোন ফযীলত বা বরকত নেই। আর এ দিন মুসলমানের জন্য কোন আনন্দ বা খুশি প্রকাশেরও দিন নয়। বরং যারা মজূসী বা অগ্নিউপাসক কেবল তারাই খাছ করে নওরোজ বা নববর্ষ পালন করে থাকে অর্থাৎ বছরের পহেলা দিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে। সাথে সাথে হিন্দু ও বৌদ্ধরাও করে থাকে।
মুসলমানদের জন্য আশূরার দিন অথ্যাৎ ১০ই মুহররম ভাল খাবার গ্রহন করার কথা বলা হয়েছে। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন ব্যক্তি যদি আশূরার দিনে তার পরিবারবর্গকে ভাল খাওয়ায়-পরায় তাহলে আল্লাহ পাক তাকে এক বৎসরের জন্য সচ্ছলতা দান করবেন।” (ত্ববারানী শরীফ)