সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা হযরত ইমাম আস সাফফাহ আলাইহি সালাম উনার বেমেছালভাবে পবিত্র লাইলাতুল বরাত উদযাপন প্রসঙ্গে

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই দোয়া কবূল হয়ে থাকে পাঁচ রাত্রিতে। আর সেই পাঁচ রাত্রি হচ্ছে- ১. পবিত্র রজবুল হারাম মাস উনার প্রথম রাত্রি, ২. পবিত্র বরাত শরীফ উনার রাত্রি, ৩. পবিত্র ক্বদর শরীফ উনার রাত্রি এবং ৪ ও ৫. পবিত্র দুই ঈদ উনার দুই রাত্রি।”

এই পাঁচ রাত্রির মধ্যে মূল রাত্রি হচ্ছে পবিত্র বরাত শরীফ উনার রাত্রি। এই রাতকে ভাগ্য রজনীও বলা হয়। আগামী এক বৎসর কি হবে, এই রাত্রিতে তা লিখা হয়ে থাকে এবং ক্বদর থেকে তা জারি হয়ে থাকে। এই জন্যই যিনি খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “এই রাত্রিতে প্রতিটি প্রজ্ঞাময় বিষয়ের ফায়সালা হয়ে থাকে।” সুবহানাল্লাহ!
আর এই রাত্রির গুরুত্বের দিকে লক্ষ্য করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন তোমরা পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ উনার রাত্র পাবে তখন তোমরা সারা রাত্র জেগে জেগে ইবাদত-বন্দেগী করবে এবং দিনে রোযা রাখবে।”

অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, “১৪ তারিখের সূর্য অস্ত যাওয়ার পরপর যখনই পবিত্র শা’বান শরীফ মাস শরীফ উনার ১৫ তারিখ শুরু হয়” তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন এবং তিনি ঘোষণা দিতে থাকেন, তোমাদের মধ্যে কেউ ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো। কোনো রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করবো। কোনো বালা-মুছিবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার বালা-মুছিবত দূর করে দিবো। এইভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি ফজর পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, “মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ঘোষণা দিতে থাকেন, কোনো তাওবাকারী বা ক্ষমা প্রার্থনাকারী রয়েছো কি? আমি তার তওবা কবুল করবো, তাকে ক্ষমা করে দিবো। কোনো প্রার্থনাকারী রয়েছো কি? আমি তার প্রার্থীত বিষয় দিয়ে দিবো। এরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি ফজর পর্যন্ত ঘোষণা দিতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ!

সুতরাং এখান থেকে অতি সহজেই অনুমেয় যে, পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান কতটুকু। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, মুস্তাজাবুদ দাওয়াত, মুহইস সুন্নাহ রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত ইমাম আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করে উনার অনুসারীদেরকে নিয়ে সারা রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী, পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ ও মক্ববুল মুনাজাত শরীফ উনার মাধ্যমে অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ উদযাপন করে থাকেন। পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মাঝে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। এই দৃশ্য দেখে সাড়ে চৌদ্দশত বৎসর পূর্বের স্মৃতি সবার স্মরণে ফুটে উঠে। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, মুস্তাজাবুদ দাওয়াত, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত ইমাম আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার দু’হাত মুবারক তুলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মহান বারী তায়ালা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবারে তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য, সমস্ত জিন-ইনসানের জন্য দোয়া-মুনাজাত করে থাকেন। আর হাজার হাজার লোক সমস্বরে আমীন! আমীন! আমীন! বলতে থাকেন। কি অপরূপ দৃশ্য! এখান থেকে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে যিনি খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক উনার সাথে যিনি সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা খলীফাতুল্লাহ হযরত ইমাম আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার কতটুকু তায়াল্লুক নিসবত মুবারক রয়েছে। যারাই এই বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশেষ মুনাজাত শরীফ-এ শামিল হবে, উপস্থিত হবে তারা প্রত্যেকেই ইহকাল ও পরকালে চরম-পরম কামিয়াবী হাছিল করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী সন্তুষ্টি বা রেযামন্দি মুবারক লাভ করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের প্রত্যেককে পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফ উনার রাত্রিতে রাজারবাগ শরীফ উনার মাঝে উপস্থিত থেকে মকবুল মুনাজাত শরীফ উনার মাঝে শরীক থেকে হাক্বীক্বী খইর, বরকত, ছাকীনা হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।