নূরে মুজাসসাম, আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “একদা হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিমাস সালাম তিনি একটি পাহাড়ের উঁচু চূড়ার উপর দিয়ে পথ চলতে ছিলেন। হঠাৎ করে ওই পাহাড়ের উপরেই একটি সাদা পাথর দেখতে পেলেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি ওই পাথরের চারপাশে ঘুরে আশ্চর্যান্বিত হলেন। অতঃপর উনার আশ্চর্যবোধ হওয়া দেখে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনাকে ওহী মুবারক করে বললেন, হে আমার নবী হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম! আপনি সাদা পাথরখানা দেখেই আশ্চর্য হয়েছেন! এর চেয়ে আশ্চর্যজনক বস্তু আপনি কী দেখতে চান?
এর জবাবে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি জ্বি বলতে না বলতেই পাথরটি ফেটে গেল। পাথরের মধ্যে সবুজ রঙের লাঠি হাতে একজন মহান বুযূর্গ ব্যক্তি দাঁড়ানো আছেন এবং উনার সামনে একটি আঙ্গুরের গাছ বিদ্যমান। অতঃপর সেই বুযূর্গ মহান ব্যক্তি তিনি বললেন, এটা আমার প্রতি দিনের খাবার। অতঃপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি ওই মহান বুযূর্গ ব্যক্তি উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনি কতকাল পর্যন্ত এই সাদা পাথরের ভিতরে থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত আছেন?
জবাবে বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি বললেন, সুদীর্ঘ চারশ বছর ধরে এই পাথরের ভিতরে আমি ইবাদত-বন্দেগী করছি। তখন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি (আরো আশ্চর্য হয়ে) বললেন, ইয়া বারে ইলাহী! আমার ধারণা যে, হয়তো বা আপনি এই মহান বুযূর্গ ব্যক্তির চেয়ে আর কোনো উত্তম মাখলুক সৃষ্টি করেননি। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার এই আবেগপূর্ণ বাণী শুনে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতগণ উনাদের মধ্যে কোনো উম্মত যদি পবিত্র অর্ধ শা’বানের রাতে তথা পবিত্র শবে বরাত উনার রাতে ২ রাকায়াত নামায আদায় করে তবে তা ওই মহান বুযূর্গ ব্যক্তি উনার চারশ বছরের ইবাদত হতেও উত্তম হবে। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি এ কথা শুনে বললেন, হায়! আমি যদি আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হতে পারতাম। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার এই মুবারক ফরিয়াদখানা সরাসরি কবুল করেন। (নুজহাতুল মাজালিস প্রথম খণ্ড)