পবিত্র শা’বান শরীফ মাস উনার মধ্যে রয়েছে পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফসহ অনেক বরকতময় রাত ও দিন

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আমি লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রজনীতে (পবিত্র লাইলাতুল বরাতে) পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেছি অর্থাৎ নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিশ্চয়ই আমিই ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত বরকতময় রাত্রিতে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়ছালা করা হয় আমার তরফ থেকে। নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী।” সুবহানাল্লাহ!

যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যূল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আমি লাইলাতুম মুবারাকাহ বা বরকতময় রজনীতে (পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফে) পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেছি অর্থাৎ নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিশ্চয়ই আমিই ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত বরকতময় রাত্রিতে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়ছালা করা হয় আমার পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই আমিই প্রেরণকারী।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র “শা’বান” শরীফ হলো- আরবী মাসসমূহের মধ্যে অষ্টম মাস। এ সম্মানিত মাসটি ফযীলতপূর্ণ হওয়ার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। তন্মধ্যে বিশেষ এবং উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি ৩য় হিজরী সনের পবিত্র ১৫ই শা’বন শরীফ, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) বাদ-আছর পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন; আর ৪র্থ হিজরী সনে এ সম্মানিত মাস উনার ৫ তারিখ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং ৪৭ হিজরী সনে ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! আবার এ সম্মানিত মাস উনারই ২৯ তারিখ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন আওলাদে রসূল হযরত সাইয়্যিদাতাল উমাম আলাইহিমাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বছরের যে পাঁচটি রাতে নিশ্চিতভাবে দোয়া কবুল হয় তন্মধ্যে পবিত্র শা’বান শরীফ মাস উনার মধ্য রাতটি অন্যতম। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নিশ্চয়ই দোয়া পাঁচ রাত্রিতে কবুল করা হয়। পবিত্র রজবুল হারাম মাস উনার প্রথম রাত, পবিত্র শা’বান শরীফ মাস উনার মধ্য রাত অর্থাৎ ১৫ তারিখ রাত, পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার রাত এবং পবিত্র দুই ঈদ উনাদের দুই রাত।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যেসব দিবসসমূহ ফযীলতপূর্ণ বলে ঘোষিত হয়েছে তা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার পূত-পবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কিংবা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অথবা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অথবা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কারো না কারো ঘটনা মুবারকের সাথে সম্পর্কযুক্ত হওয়ার কারণে হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার পূত-পবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কিংবা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অথবা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অথবা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের পবিত্র বিলাদত শরীফ, পবিত্র বিছাল শরীফ ও বিশেষ বিশেষ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দিনসমূহকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ‘আইয়্যামুল্লাহ’ অর্থাৎ ‘মহান আল্লাহ পাক উনার দিন বা দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ’ উনার পবিত্র ৫ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন- “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি তাদেরকে (উম্মতদেরকে) মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিনসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দিন। নিশ্চয়ই এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল ও শোকরকারী ব্যক্তিদের জন্য নিদর্শনাবালী রয়েছে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সত্যি সত্যি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিনসমূহের কথা স্বীয় উম্মতকে স্মরণ করে দিয়েছেন। যেমন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন পবিত্র শা’বান শরীফ মাস উনার ১৫ তারিখ রাত্রি অর্থাৎ পবিত্র বরাত উনার রাত্রি উপস্থিত হবে, তখন তোমরা উক্ত রাত্রিতে নামায আদায় করবে এবং দিনে রোযা রাখবে। কেননা নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করেন, কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো। কোনো রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করবো। কোনো মুছীবতগ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুছীবত দূর করে দিবো। এভাবে পবিত্র ফজর পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ)

মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তাই প্রত্যেক মুসলমান উনাদের উচিত, কাফির-মুশরিক তথা সমস্ত বিধর্মীদের তথাকথিত বাবা দিবস, বন্ধু দিবস, ভালোবাসা দিবস, হাত দোয়া দিবস, শ্রমিক দিবস, পহেলা বৈশাখ, অমঙ্গলযাত্রা, এপ্রিল ফুল, থার্টি ফার্স্ট নাইট ইত্যাদি কুফরী দিবস ও আমল পরিহার করে মহান আল্লাহ পাক উনার দিবসসমূহ পালন করা। আর এলক্ষ্যে পবিত্র শা’বান শরীফ মাসে যেসব বরকতময় রাত ও দিনসমূহ রয়েছে তা যথাযথভাবে গুরুত্বসহকারে পালন করা।