শবে বরাত বিরোধীতাকারীদের গুরুদের শবে বরাতের পক্ষে মত

যারা শবে বরাতের বিপক্ষে বলে তারা কুরআন ,হাদিস , তাফসীর কিছুই মানতে চায়না। নাউযুবিল্লাহ। তারা তাদের গুরুদের শিখানো বুলি তোতা পাখির মত মুখস্ত বলে যেতে থাকে। অথচ তাদের গুরুরাই শবে বরাতকে স্বীকার করে গেছে।
১. আশরাফ আলী থানভীঃ
نزول واقعی دو مرتبہ ہوا، ایک رات میں حکم نزول قرآن ہوا اور دوسری میں اسکا وقوع ہوا، مطلب یہ ہے کہ انا انزلناہ فی لیلۃ القدر میں مراد حقیقی نزول ہے اور انا انزلنا ہ فی لیلۃ مبارکۃ میں حکمی نزول ہے جوکہ شب براء ت میں ہوا ہے۔
কুরআন মূলত দুই বার নাযিল হয়েছে। এক রাতে কুরআন নাযিলের (সিদ্ধান্ত) হয়েছে। দ্বিতীয় রাতে তার বাস্তবায়ন হয়েছে। মোটকথা, কদরের রাতে কুরআন নাযিল করেছি এর অর্থ হলো, নাযিল করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছি। আর মুবারক রাতে নাযিল করেছি এর অর্থ হলো নাযিল করার সিদ্ধান্ত শবে বরাতে গ্রহণ করা হয়েছে। (ওয়ায ও তাবলীগ-পৃ. ৮)
২. মুবারকপুরীঃ
আহলে হাদীস মতাদর্শের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস আব্দুর রহমান মুবারকপুরী তার গ্রন্থ তিরমিযী শরীফের ব্যাখ্যা ‘তুহফাতুল আহওয়াযী’তে শবে বরাত সম্পর্কীয় তিরমিযী শরীফে আয়েশা আলাইহাস সালাম বর্ণিত একটি হাদীস প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লেখে-“জেনে রেখো! শবে বরাতের ফযীলত সম্পর্কীয় বেশ কয়েকটি হাদীস এসেছে। যা প্রমাণ করে যে, এর ভিত্তি আছে। শরীয়তে শবে বরাতের কোনো ভিত্তি নেই এমন ধারণা যারা রাখে সামষ্টিকভাবে ওই হাদীসগুলো তাদের বিপক্ষে প্রমাণ বহন করে।” (তুহফা. ৩/৩৮৪-৩৮৫)
৩. ইবনে তাইমিয়াঃ
আরব বিশ্ব ও লা-মাযহাবী মতবাদের ইবনে তাইমিয়া তার বিভিন্ন রচনাবলিতে শবে বরাতের ফযীলত বর্ণনা করেছে। আক্বীদা সম্পর্কীয় তার রচনা “ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকীম” গ্রন্থে লেখে,
لیلۃ النصف من شعبان فقد روی فی فضلھا من الأحادیث المرفوعۃ والآثار ما یقتضی أنھا لیلۃ مفضلۃ وأن من السلف من کان یخصھا بالصلاۃ فیھا۔۔۔۔ علیہ کثیر من أھل العلم أو أکثر ھم من أصحابنا وغیرھم- علی تفضیلھا، وعلیہ یدل نص أحمد لتعدد الأحادیث الواردۃ فیھا، وما یصدق ذلک من الآثار السلفیۃ۔
মধ্য শাবান (শবে বরাত) রাতের ফযীলত সম্পর্কীয় অনেক হাদীস রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবা, তাবেয়ীগণ থেকে বর্ণিত হয়েছে। যেগুলো শবে বরাতের ফযীলত ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে। পূর্ববর্তীদের অনেকে এ রাতে নামাযে মগ্ন থাকতেন। ...অসংখ্য বিজ্ঞ আলেম এবং আমাদের অধিকাংশ সাথী এই মতাদর্শে বিশ্বাসী। ইমাম আহমদের রহমতুল্লাহি আলাইহি উক্তি দ্বারাও তা-ই প্রমাণ করে। কেননা এ বিষয়ে রয়েছে অনেক অনেক হাদীস এবং নির্ভরযোগ্য পূর্ববর্তীদের অনুসৃত আদর্শ।(ইকতিযা, পৃ. ৪৮৪)
৪. আলবানীঃ
“শবে বরাত সম্পর্কীয় হাদীসের ক্ষেত্রে সার কথা হলো, শবে বরাত সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসগুলো সমষ্টিগতভাবে নিঃসন্দেহে ‘সহীহ’। হাদীস অত্যধিক দুর্বল না হলে আরো কমসংখ্যক সূত্রে বর্ণিত হাদীস সহীহ হিসেবে গণ্য হয়। (আয়েশা আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিত) এই হাদীসের মানও তা-ই। অতএব ইসলাহুল মাসাজিদ গ্রন্থপ্রণেতা কাসেমী কতিপয় হাদীস বিশারদের উদ্ধৃতিতে যা লিখেছে যে, “শবে বরাতের ফযীলতপূর্ণ কোনো সহীহ হাদীস নেই।” তার এই কথার ওপর আস্থা রাখা উচিত হবে না। তবে কেউ যদি এমনটা বলেই ফেলে, তাহলে বুঝতে হবে অতি চঞ্চলতা হেতু এবং হাদীসের বিভিন্ন সূত্র অন্বেষণে যথাযথ প্রচেষ্টা সীমিত হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটেছে। আসলে আল্লাহ তা’আলা তাওফীক দাতা।” (সিলসিলাতুস সহীহা ৩/১৩৮-১৩৯)
এখনো কি শবে বরাতের বিরোধীতাকারীরা গোমরাহির উপর থাকবে?